পিরোজপুর জেলায় দিন দিন বাড়ছে মাল্টা চাষ। সফল চাষীদের দেখে মাল্টা চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন ৫-৬’শ চাষী । পিরোজপুরের মাল্টা ইতিমধ্যে পরিচিতি পেয়েছে সারাদেশে। জেলার কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, বিদেশি এ ফলের দেশীয় চাহিদা মেটাতে অতীতে আমদানির ওপর নির্ভর করতে হতো। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যে এ জেলায় উৎপাদিত মাল্টা এখন রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকার চাহিদা পূরণ করছে এবং এ জেলার মাটি মাল্টা চাষের উপযোগী হওয়ায় প্রতি বছরই বাড়ছে কৃষি জমির পরিমান।
পিরোজপুরে সফল চাষীদের দেখে মাল্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন বিভিন্ন উপজেলার অনেক কৃষক । দোকানে বিদেশি ফলের সঙ্গে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এ ফলটিও বিক্রি হচ্ছে দেদার। শহরের খাদ্য সচেতন মানুষের কাছে এ মৌসুমী ফলের বেশ কদর। তাজা,বিষমুক্ত,সুমিষ্টি লেবু জাতীয় ফলের কদর বিদেশ থেকে আনা কমলা,মাল্টা, ডালিমের সঙ্গে বেশ পাল্লা দিয়েই বেড়ে চলছে। ক্রেতা-দোকানির কাছে আমদানি করা হলদে রঙের চেয়ে এ জেলার সবুজ মাল্টার কদর বেশি।
পিরোজপুর সদরের মাল্টা চাষি আবু জালাল ও সমলেশ জানান,বিভিন্ন কৃষি পণ্যের থেকে মাল্টা অল্প খরচ ও কম খাটুনিতে বেসি লাভ পাওয়া যাচ্ছে। মাল্টা বাগান থেকে ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি পাইকারি দরে ৬০-৮০টাকায় কিনে বাজারে তা ১২০টাকায় কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে। আগামীতে আমরা আরো বেশি জায়গায় মাল্টার চারা রোপন করবো।
পিরোজপুর সদর উপজেলার কৃষি অফিসার শিপন চন্দ্র ঘোষ ডেইলী বাংলাদেশ’কে জানান, ছয় বছর আগেও এ জেলায় স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ফলের মধ্যে পেয়ারা ও আমড়ার নাম ছিল শীর্ষে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকায় এ ফল দুটির ব্যপক চাহিদা ছিল। মাত্র চার বছরে গুটিকয়েক ফলচাষি কৃষি বিভাগের সহায়তা নিয়ে এ জেলার সম্ভাবনাময় মাল্টার পরিচিতি পান।
এখানে দোআঁশ মাটি মাল্টা চাষে উপযোগী,স্থানীয় কৃষকদের তা জানা ছিল না। প্রথমে শখের বশে কেউ কেউ মাল্টা বাগান করতেন। বর্তমানে এ জেলায় প্রায় ৯৫০টি মাল্টা বাগান রয়েছে। আর সফলতার মুখ দেখছেন অনেকেই।
তিনি আরো জানান,মাল্টা চাষে সার্বিক উন্নায়নে জেলা-উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা বিভিন্ন পদক্ষেপ ও কৃষকদের চারা,সার ও পরামর্শ দেওয়ায় গত বছরের চেয়ে এবছর আরো মাল্টা বাগান বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে কৃষকদের সকল সহযোগিতার কথা জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার বশির আহমেদ।
জেলা কৃষি অফিসের তথ্যসূত্রে, পিরোজপুর সদর,নাজিরপুর,মঠবাড়িয়া,কাউখালীসহ এ জেলায় এ বছর ৯৫০ টি মাল্টা বাগান রয়েছে আর চাষাবাদ জমির পরিমাণ দাড়িয়েছে ১২৫ হেক্টরেরও বেসি।