ঝালকাঠির রাজাপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্পত্তি রক্ষায় চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে প্রাক্তন, বর্তমান শির্ক্ষাথী ও স্কুলের শিক্ষক মন্ডলী বেহাত হওয়া সম্পত্তি পুনরুদ্ধার,অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধ পূর্বক বিদ্যালয়ের মান উন্নয়নের লক্ষে মতামত ও গন স্বাক্ষর কর্মসূচি পালন শুরু করেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০.৩০ মিনিটে রাজাপুর থানা সম্মুখে(প্রেসক্লাব চত্বরে এই কর্মসূচি শুরুর উদ্বোধন করেন স্কুলের প্রাক্ত ছাত্র এ্যাড.খায়রুল আলম সরফরাজ।এ সময় স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র ও বর্তমান প্রধান শিক্ষক মো. জাহিদ হোসেন চলমান আন্দালনের কর্মসূচির সাথে থাকার একাতœতা ঘোষনা করেণ।
এই মতামত ও প্রতিবাদী গনস্বাক্ষর কর্মসূচি আগামী ১৫ জুলাই ২০২০ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে।আরো যারা উপস্থিত ছিলেন স্কুলের প্রাক্তন শির্ক্ষাথী সাবেক অধ্যক্ষ শাহজাহান মোল্লা, আমরি খশরু বাবুল, মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলম নান্নু,আব্দুল ইউনুস গাজী,বাবু চন্দ্র শেখর হালদার ,জিয়া হায়দার খান লিটন,মো. জলিল হাওলাদারসহ আরো অনেকে।
ঐতিহ্যবাহী রাজাপুর পাইলট উচ্ছ বিদ্যালয়টি ১৯২৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর একাধিক দাতা বিভিন্ন অংশ হিসেবে জমি দান করেন যা মোট ৯ একর বা তার বেশী।স্কুল কতৃপক্ষের উদাসীনতায় ৯ একর জমি অবৈধ পন্থায় ভূমিদস্যুরা স্কুলের সম্পত্তি দখল করে পাকা স্থাপনা তৈরি করে বিক্রি করেন।
স্কুলের ১২০০ শির্ক্ষাথীদের শারিরীক পিটি করার জায়গা সংকোচিত হয় এবং স্কুলের শিক্ষার মান দিন দিন খারাপ হচ্ছে বলে প্রাক্তন শির্ক্ষাথীদের বিবেকের ধ্বংশ থেকে স্কুলের সকল জমি উদ্ধারের জন্য গন আন্দোলনের লক্ষে গত ১৫ জুন ২০২০ তারিখ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বিদ্যালয় প্রশাসন ও পরিচালনা পর্ষদকে ১৫ জুলাই এর মধ্যে জমি উদ্ধারের সময়সীমা বেধে দেয়া হয়।তারই অংশ হিসাবে গত ২৪ জুন ২০২০ তারিখে ১১ দফা দাবী আদায়ের জন্য সংবাদ সম্মেলন করে দাবীগুলো পেশ করেন যা নিম্মে দেয়া হলো।
১১ দফা দাবি সমূহ হলোঃ
১। বিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসের পিছনের উত্তর পাশের খাল পর্যন্ত জমিটি সীমানা প্রাচীর র্নিমাণ করে একাডেমিক কার্যের উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ করতে হবে।
২। মাঠের পশ্চিম পার্শ্বে বিদ্যালয়ের বোডিং পুকুর সংলগ্ন ভোকেশনাল ক্যাম্পাস থেকে ক্রীড়া পরিষদের ভবন র্নিমাণে অনুমতি বাতিল করে র্নিমান সামগ্রী অপসারণ করতে হবে।
৩। ভোকেশনাল ক্যাম্পাসের পূর্বের একাডেমিক ভবনের ভাড়া বাতিল করে একাডেমিক কার্যক্রম পূনরায় চালুসহ তৎসংলগ্ন জমি সুরক্ষায় সীমানা প্রাচীর র্নিমাণ করতে হবে।
৪। বিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী খেলার মাঠের সংকোচন রোধ ও খেলার সুষ্ঠ পরিবেশ রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।
৫। বদ্ধভূমি সংলগ্ন বিদ্যালয়ের জমিতে বিদ্যমান লিজ ও অবৈধ হস্তান্তরকৃত স্থাপনা উচ্ছেদে করে সীমানা নির্ধারণ ও বিদ্যালয়ের নাম সম্বলিত সাইনবোর্ড স্থাপন করতে হবে।
৬। আফসার আলী আকন শিক্ষক-ছাত্র মিলনায়তন এর ভাড়া বাতিল করে পূনরায় মিলনায়তনটি চালু করতে হবে।
৭। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের জন্য বরাদ্ধকৃত বাসভবনের দক্ষিন পার্শ্বে থানা রোড পর্যন্ত পতিত জমিতে সীমানা নির্ধারণ করে সাইনবোর্ড স্থাপন করতে হবে।
৮। বিগত বছর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রদানকৃত লীজ বাতিল করে উক্ত সম্পত্তি বিদ্যালয়ের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কাজে ব্যবহার করতে হবে।
৯। বিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া ও পরিচালনা পর্ষদ গঠনসহ সকল প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রম স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।
১০। ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টিতে অধ্যয়নরত সহ¯্রাের্ধো শিক্ষার্থীর জন্য আবশ্যক প্যারেড গ্রাউন্ড নিশ্চিত ও দীর্ঘ দিনের আলোচিত গ্রন্থাগার স্থাপন করতে হবে।
১১। ক্যাম্পাসের সম্মুখভাগে একাডেমিক পরিবেশ ও সৌন্দর্য্য বিনষ্ট করে এমন কোন উদ্যোগ,যেমন-স্টল র্নিমান বা ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান র্নিমান না করার স্থায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হবে।
উপরের দাবী বাস্তবায়নের লক্ষে চলামান কর্মসূচির অংশ হিসাবে আজকের মতামত ও প্রতিবাদী গনস্বাক্ষর কর্মসূচি প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত আগামী ১৫ জুলাই ২০২০ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে।চলমান কর্মসূচিতে রাজাপুরের বাহিরে যে সকল প্রাক্তন শির্ক্ষাথী অবস্থান করছেন তাদের মতামত অনলাইনে প্রেরণ করতে পারবে বলে জানানো হয়।এই কর্মসূচি চলমান রাখতে সার্বিক সহযোগীতা করছেন আবু হাসনাত সুমন সিকদার,জাকারিয়া সুমন,মনিরুজ্জামান রেজোয়ান,সাকিদ মাহমুদ সজল, মো. তৌহিদুল ইসলাম তুহিন, মো. রাজিব ফরাজী, মো. মাহমুদুল হাসান, সৈয়দ জাকারিয়া আলম নয়নসহ আরো অনেকে।
চলমান আন্দোলনের বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. জাহিদ হোসেন এর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন চলমান আন্দোলনের ১১ দফা দাবি আদায়ে স্কুল কতৃপক্ষ একসাথে কাজ করকে চায়,ইতিপূবে বেদখল হওয়া জমির পুরমান নির্ধারনে ভূমি সার্ভেয়ার দিয়ে মেপে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।যেসকল প্রতিষ্ঠান অবৈদ লিচ বা ভাড়ায় আছেন বলে দাবী করছেন তাদের কে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহে স্কুল পরিচালনা পর্ষদ সভা আহ্বান করে পরবর্তি পদক্ষেপ কি হবে তা নির্ধারণ করা হবে। এক প্রশ্নের উত্তরে স্কুলের প্রধান শিক্ষক চলমান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কোনভাবেই প্রতিপক্ষ মনে করছেন না।