দেশে প্রাণঘাতি কোভিড-১৯ নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ’র শুরু থেকে
বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস এম
কবির হাসান এর বিরুদ্ধে সন্মূখ সারির যোদ্ধা হিসেবে লড়াইয়ে অবর্তীণ হন।
মৃত্যুকে পায়ের ভৃত্য মনে করে ও ভয়কে জয় করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা
রোগীদের নমুনা সংগ্রহ ও আক্রান্ত রোগীদের সেবাশ্রুষা দেওয়ার মানসে তিনি
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ‘ঘরবসতি’ গড়ে তুলেছিলেন।
১৯ মার্চ লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে তিনি প্রিয়তমা স্ত্রী ও প্রিয় সন্তানদের
ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত করে ও নিজে বঞ্চিত হয়ে তাদের বরিশালের বাসায় ফেলে
রেখে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সার্বক্ষণিক অবস্থান করে
করোনা আক্রান্ত সহ সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা সেবায় আত্মনিয়োগ করেন।
তার নেতৃত্বে বানারীপাড়া উপজেলায় ১১৬ জন মানুষের নমুনা সংগ্রহ করে বরিশাল
শেবাচিম হাসপাতালের ল্যাব ও ঢাকায় রোগ তত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা
ইনস্টিটিউট আইইডিসিআরএ পাঠানো হয়। এর মধ্যে ১৮ জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
এসব রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করার কাজে তিনি নাওয়া খাওয়া,বিশ্রাম ও
ঘুম ভুলে নিয়োজিত ছিলেন। করোনা রোগী ছাড়াও তিনি গাইনী সহ বিভিন্ন রোগে
আক্রান্ত রোগীদের নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছিলেন।
এর মধ্যে অসংখ্য প্রসূুতির সিজারিয়ান অপারেশন করেছেন তিনি। সব মিলিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসা
সেবা সচল রেখে তিনি সবার আস্থা ও ভরসার প্রতীকে পরিণত হয়েছিলেন। কিন্তু
হঠাৎ করে তার শরীরে জ্বর,সর্দি,কাশি ও শ্বাস কষ্ট সহ করোনা উপসর্গ দেখা
দিলে নিজের নমুনা পাঠান বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে।
সেখান থেকে গত বৃহস্পতিবার তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। হাসপাতালের স্টাফ ও
আগন্তুক সাধারণ রোগীদের নিরাপদে রাখতে তিনি বরিশালের বাসায় গিয়ে হোম
আইসোলেশনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এর ফলে অন্যদের তিনি নিরাপদে রাখতে গিয়ে নিজ
পরিবারের সদস্যদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছেন। এদিকে মানবদরদী এ চিকিৎসকের
করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবরে বানারীপাড়াবাসী সমব্যথী হওয়ার পাশাপাশি তার
আশু সুস্থতা কামনা করেছেন ।
এ প্রসঙ্গে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস এম কবির হাসান বলেন মানবতার সেবায় ব্রতি থাকার ইচ্ছে নিয়ে চিকিৎসক হয়েছি এবং আমৃত্যু এ সেবায় ব্রত থাকবো।
তিনি সুস্থ হয়ে আবারও যেন চিকিৎসা সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পারেন
সেজন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেছেন।