বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা সেবা দিতে হাসপাতালে মাত্র পাঁচজন ডাক্তার রয়েছে। এর মধ্যে থেকে গত বুধবার একজনকে খুলনায় বদলী করা হয়েছে। অথচ জেলার ৯টি উপজেলার ৮টিতে ১১ জনের অধিক সংখ্যক ডাক্তার নিয়োগ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক নিয়োগে এমন বৈষম্যের কারণে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বর্তমানে বাগেরহাট জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে ফকিরহাটে ১৭ জন, মোল্লাহাটে ১১ জন, চিতলমারিতে ১২ জন, রামপালে ১২ জন, মোংলায় ১২ জন, বাগেরহাট সদরে ২২ জন, কচুয়ায় ১৩ জন, মোরেলগঞ্জে ১২ জন এবং শরণখোলায় মাত্র ৫জন ডাক্তার কর্মরত আছেন।
এ পাঁচ জনের মধ্যে করেনার কারণে আবার দুইজনকে রিজার্ভ রাখতে হয়। তাও একজন গত তিনদিন ধরে শাররিকভাবে অসুস্থ। ৫জন ডাক্তার থাকলেও এর মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা থাকেন প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত । এমনিতেই ডাক্তার সংকট তার উপরে জেলায় করোনাভাইরাস আক্রান্তের দিক থেকে শরণখোলা দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এ অবস্থায় এলাকাবাসী চিকিৎসা সেবা নিয়ে চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।
এদিকে গত ছয় মাস আগে সিরাজুল ইসলাম নামের একজন ডাক্তার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করে আন্তরিকভাবে রোগী দেখায় সাধারণ মানুষ তার প্রতি আস্থা ফিরে পান। কিন্তু গত বুধবার (৩ জুন) খুলনার উপ-পরিচালকের দপ্তর থেকে ডাঃ সিরাজুলকে র্যাব-৬ এর করোনা আইসোলেশন সেন্টারে বদলী করা হয়। এ ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজমল হোসেন মুক্তা ও রায়েন্দা ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলন বলেন, চিকিৎসক সংকটের মধ্যে ডাঃ সিরাজুল ইসলাম সাধারন মানুষের কাছে একজন ভাল ডাক্তার হিসাবে পরিচিত হয়ে উঠেছিল। তার কাছে মানুষ বেশী চিকিৎসা সেবা নিতে আসার কারনে ডাক্তার সংকট কিছুটা হলেও সমাধান হতো। এ মুহুর্তে তাকে বদলি করায় এলাকাবাসীর আরো ক্ষতি হয়ে গেছে।
উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রাহিমা আক্তার হাসি বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দিনের পর দিন ডাক্তার সংকট থাকার কারনে সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বৈষম্য দুর করে পর্যাপ্ত চিকিৎসক নিয়োগের দাবী জানান তিনি।
এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, আমি গত আট মাস আগে যোগদান করে এখানে মাত্র দুইজন ডাক্তার পাই। এখন পাঁচজনের মধ্যে থেকে করোনা পরিস্থিতিতে দুইজন ডাক্তারকে পালাক্রমে রির্জাভ রাখতে হয়। একজনকে জরুরী বিভাগ ও ইনডোরের ভর্তী রোগী দেখা আবার অপর জনকে আউটডোরের রোগী দেখা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডাক্তার হুমায়ুন কবির বলেন, প্রতিটি উপজেলায় একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, একজন আবাসিক মেডিলে অফিসার, একজন ডেন্টিস্ট ও পাঁচজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার থকার নিয়ম। এরপরে ইউনিয়ন ভিত্তিক ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে। শরণখোলা উপজেলার চারটি ইউনিয়নের কারণে ডাক্তার নিয়োগ কম পায়।